December 23, 2024, 4:01 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সব প্রাসঙ্গিক আইনি ও দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চুয়াডাঙ্গার সেই ২ চরমপন্থী আব্দুল মকিম ও গোলাম রসুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে এবং এতে কোনো আইন লঙ্ঘন হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও রাষ্ট্রের সবোর্চচ আইন কর্মকর্তা আমিন উদ্দিন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রাসঙ্গিক নথি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখেছি যে আব্দুল মকিম ও গোলাম রসুলের ফাঁসি কার্যকরে কোনো ভুল ছিল না।’
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল মোকিম (৬০) ও গোলাম রসুল ঝড়ু (৬২) দুর্লভপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেন ওরফে মনোয়ার মেম্বার হত্যাকাণ্ডের আসামি ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
গত বুধবার মামলাটির আইনজীবী হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই মামলার আপিলের শুনানি এখনও হয়নি। কিন্তু তার আগেই আমার মক্কেলের ফাঁসি হয়ে গেছে।’ এ ঘটনায় ওই ২ জনের পরিবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন ‘বিচারিক আদালতে তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্ট ডিভিশনে এ আদেশ কনফার্ম করা হয়েছিল। তারা জেল আপিল করেছিল। জেল আপিলের শুনানি শেষে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়।’ ‘পরে তারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিলেন। সেই আবেদন নাকচ করার পরে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়,’ যোগ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মকিম ও ঝাড়ুর আইনজীবীদের জেল আপিলের শুনানি ও নিষ্পত্তি করার সময় আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তাদের ফৌজদারি আপিল সম্পর্কে জানানো উচিত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট মুলতবি থাকা আপিলগুলো খুঁজে বের করে তা নিষ্পত্তি করতে পারত। এখন যদি তারা সে আপিল নিয়ে হাজির হয়, সুপ্রিম কোর্টে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন নিজগ্রাম চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামে চরমপš’ী ক্যাডারদের হাতে খুন হন মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মনোয়ার হোসেন। তিনি ¯’ানীয় কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের দু’মেয়াদে সদস্য ও কৃতি খেলোয়াড় ছিলেন। তার খুনের ঘটনায় তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই হত্যা মামলার এক যুগ পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল মামলার বিচারে তিন জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ, দুই জনকে যাবজ্জীবন ও অপর আসামিদের খালাস দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২। রায়ে ঝড়ু ও মোকিমসহ তিনজনকে ফাঁসি ও দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে হাইকোর্ট ঝড়ু ও মোকিমের ফাঁসি বহাল রেখে বাকি সবাইকে খালাস দেন।
মৃত্যুদন্পদেশপ্রাপ্তরা হলেন- একই ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, মোকিম ও ঝড়ু।
Leave a Reply